মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি

মহম্মদপুর উপজেলার কেড়িনগর গ্রামে আকলিমা খাতুন নামের এক কলেজছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অগ্নিদগ্ধ কলেজছাত্রী আকলিমা খাতুন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ২২ দিন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যু হয়। পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৫ জনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে মহম্মদপুর থানা পুলিশ। আকলিমা কেড়িনগর এলাকার আকরাম হোসেনের মেয়ে ।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায় , কলেজছাত্রী আকলিমা খাতুন (১৮) এর সাথে একই গ্রাম কেড়িনগরের মাসুদ মোল্যার ছেলে নাজমুল মোল্যার সাথে বিয়ে হয় দুই বছর আগে। প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হলেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় বিয়ের ৭ মাস পর আকলিমা খাতুন নাজমুলকে তালাক দেয়। বিষয়টি নাজমুল মেনে নিতে পারেনি। কিছু দিন পর থেকে নাজমুল ওই ছাত্রী আকলিমাকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। আকলিমা তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নাজমুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং হুমকি দেয়।
সে বলে তোরে এসিড মারব, তোর ঘরে আগুন জ্বালায়ে দেবো। বিষয়টি নিয়ে আকলিমা তার পরিবারকে জানায়। এরই মধ্যে গত ১৫ই আগস্ট বিকালে ওই ছাত্রী বাথরুমে যাওয়ার সময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা নাজমুলের লোকজন আকলিমার ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে তার বিভিন্ন স্থানে বাঁধে এবং ডিজেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। আগুনে আকলিমার শরীরে বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায় এবং সে ডাক চিৎকার শুরু করে। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে এবং পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে মেয়েটি মারা যায়।
সরজমিন গেলে বিষয়টি নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়। ঘটনার পরদিন মেয়েটির দাদা বাদী হয়ে মহম্মদপুর থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ ৫ জনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেন। মহম্মদপুর থানার ওসি তারক বিশ্বাস মেয়েটির মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে মানবজমিনকে বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলার ৫ জন আসামিকে আটক করা হয়েছে। বাকি দুইজন পলাতক রয়েছে।