.jpg)
মাত্র দুই মাস আগে বিয়ে হয়েছিল সেলিনা-শরীফ দম্পত্তির। কিন্তু দুই জনের মধ্যে বনিবনা ছিল না। ছিল দাম্পত্য কলহ। হত্যার উদ্দেশ্যেই ছুরি নিয়ে ওইদিন বেড়ানোর কথা বলে ফুফুর বাড়ি থেকে সেলিনাকে নিয়ে বের হয়েছিল শরীফ। স্ত্রীকে হত্যা করে নিজের শরীরে আঘাত করে বাড়ি ফিরে পরিবারের কাউকে বুঝতে দেননি। ভর্তি হন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ত্রিশাল থানা পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ বিঞ্জ আদালতে স্বামী শরীফের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমনই তথ্য মিলেছে। জবানবন্দি শেষে ঘাতক শরীফকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। স্বামীর হাতেই প্রাণ হারানো নববধূ সেলিনা খুনের রহস্য উদ্ঘাটনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ত্রিশাল সার্কেল এএসপি স্বাগতা ভট্রাচার্য মৌ।
দুইমাস আগে উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের রায়েরগ্রামের আলামিনের মেয়ে সেলিনা আক্তারের বিয়ে হয় আপন মামা রুহুল আমিনের ছেলে শরীফের সঙ্গে। গত রবি সন্ধ্যায় সেলিনাকে হত্যা করে স্বামী।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ময়মনসিংহের বিজ্ঞ আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শরীফ জানায়, শরীফদের কোন বসতঘর না থাকায় বিয়েতে সম্মতি ছিল না সেলিনার। পরিবারের চাপে বিয়ে হলেও তাদের মধ্যে কোন বনিবনা ছিল না। মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না বলে কলহ লেগেই থাকত। হত্যার উদ্দেশ্যেই গত রবিবার সন্ধ্যার পর আগে থেকেই গরু জবেহ করার ছোরা নিয়ে স্ত্রী সেলিনাসহ বের হয় শরীফ। শরীফ সেলিনাকে নিয়ে আসে পৈতৃক ভিটেবাড়ির কাছে। আবেগি কথা বলে তাকে বাড়ির পাশে নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। এরপর গোপনে ব্যাগের ভেতর লুকিয়ে আনা ছুরি বের করে সেলিনাকে এলোপাথারি আঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর নদীর পানিতে ছুরিটি ধুয়ে বাড়ির পাশে একটি খড়েরপালায় লুকিয়ে রাখে। এসময় নিজেকে আড়াল করার জন্য তার শরীরে আঘাত করে বাড়ির উঠোনে এসে পরে যায়। বাড়ির লোকজন তাকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) সুমন রায় জানান, হত্যা করার পরপরই স্বামী তার বোনকে ফোনে মেরে ফেলার সংবাদটি জানায়। এরই সুত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে তার বোনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেড়িয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য। পরে মেডিক্যাল থেকে ছুটি দেওয়ার পর আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি নির্মম হত্যাকাণ্ডের বর্ননা দেন।