সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ
নিজস্ব প্রতিবেদক : জনগণের সেবা করলে, মানুষের কল্যাণে কাজ করলে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার না কওে ক্ষমতাকে জনগণের সেবায় নিবেদন করলে জনগণ তার প্রতিদান দিতে ভুল করেনা এটাই প্রমাণ করে দেখালেন গৌরিপুরের জনপ্রিয় মেয়র-সমাজসেবক সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। ষড়যন্ত্রকারীরা তার বিরুদ্ধে শুধু ষড়যন্ত্র করেই থেমে থাকেনি, তিনি যাতে ভোটের জন্য জনগণের দুয়ারে হাজির হতে না পারেন সেজন্য সব ধরণের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে, চেষ্টা করেছে জেলে আটকে রাখতে। সবশেষে কেন্দ্র দখল ও ভোটে কারচুপি করে জয় ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করেছে কিন্তু জনগণের প্রতিরোধের মুখে সফল হতে পারেনি ষড়যন্ত্রকারীরা। ষড়যন্ত্রকারীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছে জনগণ। প্রিয় নেতার গলায় বিজয়ের মালা পড়িয়ে দিয়ে প্রমাণ করেছে বীর বাঙ্গালী বেঈমানী করে না। নির্বাচনের আগে ভোটের জন্য জনগণের কাছে যেতে না পারলেও জনগণ কিছু মনে করেনি, তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে।
বলছি ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনের কথা। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ রফিকুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন গৌরীপুরে। সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে তৃতীয়বারের মত মেয়র হলেন রফিকুল ইসলাম। নারিকেল গাছ প্রতীকে তিনি ৭ হাজার ৮৭৮ ভোট পেয়েছেন। তাকে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার আবদুর রহিম। এ নিয়ে তিনি টানা তিনবার বিজয়ী হলেন তিনি। ঘোষিত ফলাফলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে শফিকুল ইসলাম হবি ৭ হাজার ২৬৬ ভোটে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন। অপরদিকে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মো. আতাউর রহমান আতা ৯২৮ ভোট, আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী আবু কাউছার চৌধুরী রন্টি চামচ প্রতীকে ২২৯ ভোট, ন্যাপ মনোনীত কুঁড়েঘর প্রতীক নিয়ে আবু সাঈদ মো. ফারুকুজ্জামান ৭৯ ভোট পেয়েছেন। গৌরীপুর পৌরসভায় মোট ভোটার ছিল ২১ হাজার ২১২ জন। ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ১৬ হাজার ৫৮৬ ভোট। প্রদত্ত ভোট ৭৮.১৯ ভাগ।
ভোটের আগে যেতে পারিনি, তাই ভোটের পর যাচ্ছি : সৈয়দ রফিকুল ইসলাম
ভোটের আগে প্রচার-প্রচারণা করে নির্বাচনী মাঠ সরগরম করে রাখে প্রার্থীরা। জয় নিশ্চিত করতে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চষে বেড়ান পাড়া-মহল্লার অলিগলি। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রার্থনা করেন কাঙ্খিত ভোট। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। নানা প্রতিবন্ধকতায় ভোটের আগে তিনি ভোটারদের কাছে গিয়ে চাইতে পারেনি ভোট। তাই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ছুটে চলেছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। গত ৩০ জানুয়ারি গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম হবিকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মত মেয়র নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। এরপর থেকেই প্রতিদিন পৌরসভার বিভিন্ন মহল্লায় গিয়ে ভোটারদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন মেয়র। ভোটাররাও তাকে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছেন। স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে গত বছরের ১৭ অক্টোবর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্রকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ওই হত্যার জেরে পুড়ানো হয় মেয়র রফিকুলের বাড়িঘর। পরে হত্যা মামলায় রফিকুলকে আসামি করা হলে তাকে অব্যাহতি দেয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে।
এদিকে হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হন রফিকুল ইসলাম। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে দলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হয়ে প্রতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি¦তা করেন তিনি। তবে নির্বাচনী প্রচারণায় অনেকটাই কোণঠাসা ছিলেন রফিকুল। অভিযোগ রযেছে তার প্রচারণায় বাধা, কর্মীদের হুমকি, মারধর ও বাড়িঘরে হামলার করার। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে দেখা করে আসছেন নবনির্বাচিত এই মেয়র। সৈয়দ রফিকুল ইসলামের ছেলে রাফসান জানি অভি বলেন এই নির্বাচনে শুধু প্রার্থীদের ভোটের লড়াই হয়নি। এই নির্বাচনটা ছিল সত্য ও মিথ্যার লড়াই। জনগণের নিরব ভোটে এই লড়াইয়ে সত্যের জয় হয়েছে। জনগণ আমাদের সাথে ছিল বলেই এই সত্যের লড়াইয়ে বাবা জয়ী হয়েছেন।
সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন ‘আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে শুভ্র হত্যা মামলায় মিথ্যা আসামি করা হয়েছে আমাকে। আমার প্রচারণায় বাধা, গাড়ি ভাঙচুর, কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। আমি নিজেও ঘর থেকেও বের হয়ে ভোটারদের কাছে যেতে পারিনি। কিন্তু জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছে। তাই ভোটের পর তাদের কাছে গিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়েছে জনগণ
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার গৌরীপুর পৌরসভার জনপ্রিয় মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। দুই মেয়াদে এলাকার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে তিনি ব্যাপক উন্নয়নের স্বাক্ষর রেখেছেন। পৌরসভার সার্বিক উন্নয়নে তার ভূমিকা দেশব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। নিজের সততা, দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগ তথা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেছেন। এলাকার মানুষের সকল আপদে-বিপদে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছেন এবং সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। মানবসেবা দিয়ে তিনি যখন এলাকায় জনপ্রিয়তার শীর্ষ শিখরে আরোহন করেছেন ঠিক তখনই একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। নিজ দলের প্রিয় মানুষ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হত্যা মামলায় তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয় এবং অভিযোগের বিন্দুমাত্র প্রমান ও গ্রহণযোগ্যতা না থাকা সত্তেও তাকে দল থেকে বহিস্কারের
প্রস্তাব করা হয় (অবশ্য নেতৃবৃন্দ ষড়যন্ত্রের বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রস্তাব অনুমোদন করেনি।)
প্রসঙ্গত, গত বছরের গত ১৭ অক্টোবর রাতে আতর্কিত হামলায় খুন হন গৌরীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্র। এ ঘটনার দুইদিন পর বহু নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে ১৯ অক্টোবর রাতে থানায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন নিহতের ছোট ভাই। ওই মামলায় ১১নং আসামি করা হয় পৌর মেয়র সৈয়দ রফিককে। জানা যায়, সৈয়দ রফিকুল ইসলাম গৌরীপুর পৌরসভার টানা দুইবারের মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তবে শুভ্র হত্যাকান্ডের পর স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ সৈয়দ রফিককে বহিস্কারের জন্য দলের কেন্দ্রীয় দফতরে সুপারিশ পাঠালেও বহিস্কার আদেশ কার্যকর হয়নি। মেয়র রফিকের পরিবারের দাবি, শুভ্র হত্যা মামলায় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে সৈয়দ রফিককে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে তাঁর কোন সম্পৃক্ততা নেই। মূলত পৌর নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখতেই সৈয়দ রফিককে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, হত্যাকান্ডের পর নিহতের স্বজনরা জড়িত অনেকের নাম প্রকাশ করে মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়েছে। অথচ তারা মামলায় আসামি হয়নি। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে মামলা হওয়ার আগেই মেয়রের বাড়ীঘরে হামলা করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রিয়াদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি গৌরীপুর উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তবে সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আবার জনগণের মাঝে ফিরে এসেছেন সৈয়দ রফিকুল ইসলাম।